খবরা-খবর
ফ্যাসিস্ট আরএসএস-বিজেপির দাঙ্গা-প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান নিয়ে সম্প্রীতির মহামিছিল দশটি বামপন্থী দলের
ten-left-wing-parties

হাওড়ার শিবপুর ও হুগলির রিষড়া এলাকায় রামনবমীর শোভাযাত্রাকে ব্যবহার করে বিজেপি নেতাদের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে যে মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা হামলা চলে তার বিরুদ্ধে সিপিআই(এমএল) তৎক্ষণাৎ দ্রুত উদ্যোগ নেয়। আক্রান্ত এলাকায় মানুষের মাঝে প্রথম সুযোগেই গিয়ে পাশে দাঁড়ানো, তথ্যানুসন্ধান চালানো, কয়েকটি এলাকায় পথসভা করে সাধারণ মানুষের সামনে জোরালো আবেদন রাখা, হাওড়ায় জেলা পুলিশ কমিশনারেটে স্মারকলিপি প্রদান ইত্যাদি কর্মসূচি নেওয়া হয়। পরের ধাপে গত ৯ ও ১০ এপ্রিল যথাক্রমে হুগলি ও হাওড়ার ওই অঞ্চলগুলি পরিক্রমা করে সম্প্রীতির মহামিছিল সংগঠিত করা হয় রাজ্যের বিভিন্ন বামপন্থী দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে। সিপিআই(এম), সিপিআই(এমএল), সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, এসইউসিআইসি, আরসিপিআই, এমএফবি, ওয়ার্কার্স পার্টি ও বলশেভিক পার্টি – এই দশটি বামপন্থী দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকসহ বহু সাধারণ মানুষ এই দুদিনের মিছিলে সামিল হন। রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ এই লালঝাণ্ডার মিছিলকে স্বাগত জানায়। অনেক জায়গায় মানুষ ছুটে এসে মিছিলে জল, চকলেট এমনকি ফুল দিয়েও সম্বর্ধনা জানায়। এই মিছিল যেমন সাধারণ মানুষের কাছে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিতে চাইছিল, তেমনি মানুষও বার্তা দিতে চাইছিল যে এই দাঙ্গা ও হানাহানির রাজনীতিকে তাঁরা মোটেই বরদাস্ত করতে চান না।

প্রথম দিন কোন্নগর থেকে মিছিল শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এমএল) রাজ্য সম্পাদক অভিজিত মজুমদার, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। শেষে উত্তরপাড়া গৌরি হলের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখা হয়। আরএসএস-বিজেপির দাঙ্গা উদ্যোগ ও তা রুখতে টিএমসি সরকারের পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতাকে নিশানা করে আওয়াজ ওঠে।

পুলিশ প্রথম থেকেই এই উদ্যোগ আটকাতে চেয়েছিল। আক্রান্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসবাসের এলাকাগুলি দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। শেষ মুহূর্তেও তারা মিছিলের রুট বদলাতে বাধ্য করে। দ্বিতীয় দিন হাওড়ায় সালকিয়া মোড়ে হঠাৎ মিছিলের গতিরোধ করে পুলিশ। কিন্তু মিছিলের জনতা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। পুলিশ আরও বড় বাহিনী নামায়। মিছিলের সামনের অংশ ব্যারিকেড ভেঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সভাস্থলে পৌঁছে সভা করে, অন্য অংশ সালকিয়া মোড়েই রাস্তার ওপর অবস্থান ও সভা চালিয়ে যায়।

left-wing-parties

৯ এপ্রিল মিছিল শুরুর সময় সিপিআই(এমএল) রাজ্য সম্পাদক অভিজিত মজুমদার ও সিপিআই(এম) নেতা বিমান বসু সহ নেতৃবৃন্দ

harmony-by-ten-left-wing-parties

বেলঘরিয়ায় মিছিল

৯ এপ্রিল বেলঘরিয়ায় দাঙ্গার বিরুদ্ধে শান্তি ও সম্প্রীতির আহ্বান নিয়ে বেলঘরিয়া ষ্টেশন চত্বর থেকে “গড়ো প্রতিরোধ, ধর্মের উস্কানি দিয়ে বিভেদ হিংসা ছড়ানোর বিরুদ্ধে” ব্যানারের তলে নাগরিক মিছিল সংগঠিত হয়। বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও অনেক সাধারণ নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। মিছিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত সভায় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এবং হিংসার বিরুদ্ধে এবং রুটি-রুজির দাবিতে বিভিন্ন বক্তা বক্তব্য রাখেন। সম্প্রীতির পক্ষে, মৌলবাদী হিংসার বিরুদ্ধে সব মানুষকে একজোট হওয়ার আহ্বান রাখা হয়।

খণ্ড-30
সংখ্যা-10