বিহারে আশা কর্মীরা লাগাতার ধর্মঘটের পথে
continuous-strike

৯ দফা দাবির ভিত্তিতে বিহারের আশা কর্মীরা ১২ জুলাই ২০২৩ থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন। এরমধ্যে এমন কিছু দাবি রয়েছে, বিহার সরকার যেগুলো আগেই মেনে নেওয়া সত্ত্বেও কার্যকর করেনি।

আশা সংযুক্ত সংঘর্ষ মঞ্চের নেত্রী শশী যাদব এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সারা বিহার জুড়ে সমস্ত জেলায় ধর্মঘটের নোটিশ সংশ্লিষ্ঠ আধিকারিকদের ইতিমধ্যেই পেশ করা হয়েছে আর সমস্ত জেলার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সামনে ২২ জুন প্রতিবাদী বিক্ষোভ দেখানো হবে।

তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর যাবত আশা কর্মীদের অবদানের ফলেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রভুত উন্নতি হয়েছে, বিশেষত, প্রসবকালীন মৃত্যু অনেক কমানো গেছে, টিকাকরণের জাতীয় পরিসংখ্যানে বিহার এখন অনেকটাই এগিয়ে। অতিমারির সময়ে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আশা কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করেন, এমনকি অনেকেই মারা যান। কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পরিবারগুলোকে এক কানাকড়িও ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

আশা কর্মীদের অবদান নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং পাটনা হাইকোর্টও প্রশংসাসূচক কথাবার্তা বলে, কিন্তু দুর্ভাগ্য এটাই যে, তাদের বুনিয়াদি দাবিগুলো আজও অমীমাংশিত থেকে গেছে।

আশা কর্মীদের সামনে তাই ধর্মঘট ছাড়া আর অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই। তারা রাজ্যজুড়ে লাগাতার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যতদিন না পর্যন্ত দাবিগুলো আদায় হয়। ২২ জুন রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সামনে এবং ৪ জুলাই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

bihar-are-on-a-continuous-strike
আশা কর্মীদের মূল মূল দাবি

১) রাজ্য সরকার প্রতি মাসে আশা কর্মীদের ‘পুরস্কার’ স্বরূপ যে ১০০০ টাকা দেয় তা রীতিমতো অপমানকর। এই অর্থ প্রদানের নামকরণ বদলিয়ে নিয়মিত মাসিক ভাতায় তা রূপান্তরিত করতে হবে। এই মাসিক ভাতাকে বৃদ্ধি করে ১০,০০০ টাকা করতে হবে।

২) মাসিক ওই ১,০০০ টাকাও এপ্রিল ২০১৯ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রদান করা হয়নি, যা অবিলম্বে প্রদান করতে হবে।

৩) আশা কর্মীদের ভাতা ইত্যাদি প্রদানের সময় কোন ধরনের উৎকোচ/কমিশন আদায় করা বন্ধ করতে হবে।

৪) একটা শাড়ির পরিবর্তে আশা কর্মীদের পুরো ইউনিফর্ম দিতে হবে। ব্লাউজ, পেটিকোট ও শীতকালীন পোষাক সরবরাহ করতে হবে।

৫) আশা ফেসিলিটেটারদেরও সরকারি খরচে সমস্ত পোষাক পরিচ্ছদ দিতে হবে। তাঁদের প্রতি মাসে ন্যূনতম ৫০০ টাকা হারে যাতায়াতের খরচ দিতে হবে।

৬) বহুকাল আগে বিভিন্ন কাজের জন্য আশা কর্মীদের যে সমস্ত রেট স্থির করা হয়েছিল, তা সংশোধন করতে হবে।

৭) আশা এবং ফেসিলিটেটারদের নিয়মিতকরণ ও রাজ্য সরকারি কর্মীর স্ট্যাটাস দিতে হবে।

৮) অতিমারীর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে যাদের মৃত্যু হয়, তাঁদের ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্য সেস থেকে ৪ লক্ষ টাকা এবং কেন্দ্রীয় বিমা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে।

৯) আশা কর্মী ও ফেসিলিটেটারদের সমস্ত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে আনতে হবে। তাঁদের পেনশন দিতে হবে। যতদিন পর্যন্ত না তা কার্যকর হচ্ছে, ততদিন অবসরকালীন প্রকল্প হিসাবে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে।

১০) ২০১৯’র জানুয়ারিতে আশা ইউনিয়নের সাথে সরকারের যে চুক্তি হয়, তা কার্যকর করতে হবে।

খণ্ড-30
সংখ্যা-20