সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতির ডাকে দেশজুড়ে প্রচার অভিযান হরতাল কর্মসুচি সফল করুন
agriculture-and-rural-labor-association

‘৫ নিশ্চয়তা’র দাবিতে দেশব্যাপী ১-১৫ আগস্ট ২০২৩ আয়ারলা প্রচারাভিযান পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে সুনিশ্চিত করতে আয়ারলা রাজ্য কমিটি গত ৩১ জুলাই ২০২৩ এক অনলাইন বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠক থেকে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

• ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই প্রচারাভিযানে ‘৫ নিশ্চয়তা’র দাবিকে গ্রামাঞ্চলে জনপ্রিয় করে তুলতে সর্বত্র বৈঠক, সভা, পদযাত্রা, কনফারেন্স, লিফলেট বিতরণ, মাইক প্রচার ইত্যাদি করা হবে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দরিদ্রদের অপমানিত করেন এই বলে যে দরিদ্ররা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের benefit seekers অর্থাৎ প্রকল্পের সুবিধা সন্ধানী বা সুযোগ সন্ধানী।

আমাদের প্রচার অভিযানে প্রধানমন্ত্রী/স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করতে হবে। বলতে হবে যে “সরকারি প্রকল্পগুলি ভিক্ষা বা দান নয়, এগুলি জনতার অধিকার”। স্মরণ করিয়ে দিতে হবে যে জনতার ট্যাক্সের টাকা থেকেই প্রকল্পের অর্থ আসে। দাবি তুলতে হবে যে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীকে এই অপমানজনক শব্দ প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই মন্তব্যের জন্য দরিদ্র দেশবাসীর সামনে ক্ষমাভিক্ষা চাইতে হবে।

• ৫ আগস্ট দেশব্যাপী ‘গ্রামীণ মেহনতিদের হরতাল’ সংগঠিত হবে। ঐ দিন ব্লক দপ্তর থেকে গ্রামস্তর — সাংগঠনিক ক্ষমতানুসারে ব্লক স্তরে যেকোনো এক বা একাধিক জায়গায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে হবে।

‘৫ নিশ্চয়তা’ চেয়ে হরতালের ডাক দেওয়া পোস্টারিং ও লিফলেটিং প্রয়োজন। গ্রামীণ বাজার এলাকায়, রেল স্টেশন, বাস স্টপেজগুলিতে হাতে লেখা পোস্টারিং করতে হবে।

 • ৯ আগস্ট একদিকে বিশ্ব আদিবাসী দিবস অন্যদিকে ঐ দিনই শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা সহ কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সংগঠনগুলি যৌথভাবে রাজ্যে রাজ্যে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে।

এরাজ্যে ঐদিন কলকাতা ও শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত মিছিল ও সমাবেশে আমরা শহর সংলগ্ন গ্রামাঞ্চল থেকে অংশগ্রহণ করছি। পাশাপাশি বাঁকুড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ জেলাগুলিতে আদিবাসী জনতার অধিকার রক্ষায় বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালনের মধ্য দিয়ে সোচ্চার থাকছি।

• ১৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবস। ঐদিন দলিত-মেহনতি মহল্লাগুলিতে ‘পতাকা উত্তোলন’ সহ সংবিধান ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আমাদের শপথ গ্রহণ করতে হবে।

যে ‘৫ নিশ্চয়তা’র দাবিতে আমরা সোচ্চার থাকছি সেগুলি হল।

১) কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই গড়ে ওঠা প্রতিটি জনবসতির সুসংহত সমীক্ষা সুনিশ্চিত করে নয়া আবাস আইন। আবাস অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি। সকল ভূমিহীনের জন্য ৫ ডেসিমেল জমি সহ পাকা বাড়ি।

২) নারেগাতে ২০০ দিনের কাজ, ৬০০ টাকা মজুরি এবং সময় মেনে মজুরি প্রদান সুনিশ্চিত করা।

৩) প্রত্যেক বয়স্ক মানুষ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিধবা মহিলাদের মাসিক ৩ হাজার টাকা পেনশন।

৪) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অধিকার সহ দলিত, আদিবাসী, মেহনতি, দরিদ্র পরিবারে ২০০ ইউনিট বিনা পয়সার বিদ্যুৎ।

৫) দলিত-আদিবাসী-সংখ্যালঘুদের মর্যাদা সহ অধিকারগুলির নিশ্চয়তা

এ রাজ্যের বিশেষ দাবি

মোদী সরকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে টাকা পাঠানো বন্ধ করায় ১০০ দিনের কাজ এরাজ্যে বন্ধ আছে প্রায় পৌনে দু’বছর। এই কাজ চালু করতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার নিজে চালু করবে বা বকেয়া মজুরি দেবে এই প্রতিশ্রুতি বারবার দিলেও বাস্তবে তা মিথ্যা আশ্বাসে পরিণত হয়েছে।

আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ভূমিকাকেও তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন করব। একই প্রশ্ন তুলব আবাস যোজনা নিয়েও। ‘নিজ ভূমি, নিজ গৃহ’ জাতীয় রাজ্য প্রকল্পের ব্যর্থতা কেন, এই প্রশ্নও তুলে ধরতে হবে।

এনআরইজিএ নিয়ে আমরা রাজ্য কমিটি থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে রাজভবন অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। কয়েকটি জেলা/ব্লক কমিটির এই লক্ষ্যে আন্তরিক উদ্যোগে ছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষিত হতে এই কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়।

আগস্ট শেষে রাজ্য কমিটির বিশেষ বৈঠক থেকে ‘১০০ দিনের কাজ’ নিয়ে সুসংহত আন্দোলন কর্মসূচি (বড় পরিধিতে প্রচার, রাস্তা অবরোধ, জবকার্ডধারীদের রাজভবন অভিযান ইত্যাদি) গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

- আয়ারলা, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি

খণ্ড-30
সংখ্যা-26