প্রতিবেদন
ছিঁড়ে ফ্যালো যন্ত্রণার দিনলিপি!
diary-of-pain

আনন্দের একলা উড়ান! কিন্ত ক্লান্ত ডানা, তৃষ্ণায় শুকনো ঠোঁট একসময় জানান দেয়- তোমার এই একলা উড়ানেই তোমার বিপদ! নিঃসীমে হারিয়ে যাওয়ার!

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক হওয়ার পর আজকের তরুণ-তরুণীরা আর প্রথাগত চাকরির তালাশে থাকেন না। সরকারি অফিস, রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ও সংস্থার দরজা তো কবে থেকেই বন্ধ। স্থায়ী রোজগারের আশায় জলাঞ্জলি দিয়ে অবশেষে ‘আধুনিক রানার’। তাই-ই সই! একটা বাইক, একটা স্মার্টফোন। সেই স্মার্টফোনই কর্মক্ষেত্র। নিয়োগ তার মাধ্যমেই। ‘তুমি শ্রমিক নও, স্বাধীন কন্ট্রাক্টর! নিজেই নিজের শ্রমের মালিক! নিজেই নিজের নিয়ন্তা!’ কিন্তু অচিরেই সেই ভুল ভেঙে যায়। পিঠে ভারী বোঝা নিয়ে জনবহুল যানবহুল পথে নিরন্তর শুধু ছোটা। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি এমনকি প্রকৃতির ডাকেও সাড়া দেওয়ার ফুরসৎ নেই। পিছনে রেটিং-এর তাড়া। যখন তখন আই ডি ব্লকের ভয়। তখন প্ল্যাটফর্ম কর্মীটি হাড়ে হাড়ে বুঝে গেছে, ‘স্বাধীন কন্ট্রাক্টর’ নয়, সে আসলে দিনমজুরেরও অধম। তার কোনো নিয়োগত্র নেই, চুক্তির শর্তগুলো আইনি ভাষার মারপ্যাঁচে দুর্বোধ্য। ন্যূনতম মজুরি বলতে কিছু নেই। সংস্থার মর্জিনির্ভর পারিশ্রমিক। সবেতন ছুটি, চিকিৎসা ভাতা, দুর্ঘটনা বিমা, পেনশন, এমনকি অভিযোগ জানানোর কোনো ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। অথচ স্বাস্থ্যহানি তো ঘটেই চলেছে, প্রতিমুহূর্তে ওঁত পেতে আছে দুর্ঘটনা। বাইক কেনার ইএমআই আর দুর্মূল্য জ্বালানিতেই কষ্টার্জিত আয়ের বড় অংশ চলে যায়।

যুগের সঙ্গে পুঁজির শোষণের ধরণ, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক ক্রমাগত পাল্টাচ্ছে। আর সেই পরিবর্তনের হাত ধরেই গিগ অর্থনীতি হু হু করে বেড়ে চলেছে, মূলধারার অর্থনীতিকে কোণঠাসা করে। আর শ্রমিকের শ্রেণি পরিচিতি মুছে তাকে ক্রমশ ‘একলা-মানুষ’, ব্যক্তি মানুষে পরিণত করছে। শ্রমের বাজারে শ্রমিকের স্বীকৃতি হারিয়ে নতুন অভিধা-প্রাপ্ত সেই একলা-মানুষের না আছে আইনি সুযোগসহ শ্রমিকের প্রাপ্য কোনো অধিকার, না আছে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ। এই নতুন অভিধাটি হল গিগ কর্মী বা প্লাটফর্ম কর্মী – তথাকথিত ‘স্বাধীন’ বিশেষণটি যেন তার নীরব যন্ত্রণাক্লীষ্ট জীবনের প্রতি এক নিষ্ঠুর ব্যঙ্গ। সবই ধূর্ত পুঁজির চালু পরিভাষা। শ্রম চুরির নিত্য নতুন ছলা কলা। সরকারও তার সঙ্গে সঙ্গত করে চলেছে। নিয়োগকর্তা হিসেবে সব দায় যেমন ঝেড়ে ফেলেছে নিজে, তেমনই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ৪৪টি শ্রম আইনকে ৪টি শ্রম কোডে বেঁধে শ্রমিকদের হতমান দুর্বল নিঃস্ব করে পুঁজির হাত শক্ত করে চলেছে। গিগ কর্মীদেরও চাতুর্যের সঙ্গে ‘শ্রমিক’ সংজ্ঞার বাইরে রেখে তাদেরও ন্যূনতম অধিকারটুকু থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।

প্রথম নীতি আয়োগের রিপোর্টে (ইন্ডিয়াস্ বুমিং গিগ অ্যান্ড প্ল্যাটফর্ম ইকোনমি, পলিসি ব্রিফ) বলা হয়েছিল ২০২০-২১-এ ভারতে প্রায় ৭৭ লক্ষ গিগ কর্মী (মোট শ্রমশক্তির ১.৫% ) অর্থনীতিতে রয়েছেন। ২০২৯-৩০-এ সেই সংখ্যা পৌঁছাবে ২.৩৫ কোটিতে। এবং সেখানে বিশেষভাবে কাজের সুযোগ রয়েছে মহিলা ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ এবং মাইকেল অ্যান্ড সুজান ডেল ফাউন্ডেশনের গবেষণা-সমীক্ষা বলছে – আগামী ৮-১০ বছরের মধ্যে ভারতে গিগ কর্মীর সংখ্যা পৌঁছাবে প্রায় ৯ কোটিতে। বর্তমানে এই শ্রমশক্তির প্রায় ২৮% মহিলা। প্রথম লক ডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন প্রায় ৪৭% মহিলা। অনেকেই আর পুরোনো কাজে ফিরতে পারেননি বা কাজ ফেরত পাননি। সংগঠিত ক্ষেত্র মহিলাদের জন্য ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাওয়া, স্থায়ী কাজের অভাব, কর্মসংস্থান সৃষ্টির অত্যন্ত মন্থর হার ইত্যাদির কারণে গিগ অর্থনীতিতে মহিলাদের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। তারা আছেন ড্রাইভার, ডেলিভারি পার্টনার, ল্যাব টেকনিশিয়ান, কারখানা-কর্মী, বিউটিশিয়ান, গৃহ পরিচর্যাকারী ও শিক্ষা সংক্রান্ত পরিষেবায়। বিভিন্ন সংস্থায় তারা বিভিন্ন অনুপাতে আছেন। যেমন ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম জোম্যাটোতে মহিলা কর্মীর অনুপাত আপাতত মাত্র ১%; ‘আরবান কোম্পানি’র ৪৫০০০ কর্মীর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মহিলা।

প্রত্যাশা ছিল এই প্ল্যাটফর্ম মহিলাদের আরও নমনীয়তা, মর্যাদা, স্বায়ত্ততা ও উন্নত আয়ের প্রতিশ্রুতি দেবে। কিন্তু প্ল্যাটফর্ম অর্থনীতির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে আসল ছবিটা সামনে এল। ‘অ্যাকশন এইড’-এর সাম্প্রতিক গবেষণা দেখিয়েছে – এই ক্ষেত্রে মহিলারা নানা দিক থেকেই অসুরক্ষিত; কম মজুরি, সীমিত নমনীয়তা, নিরাপত্তার অভাব, লিঙ্গবৈষম্য, বিশেষ করে অ্যালগোরিদমিক ম্যানেজমেন্টের নানা অসৎ, অস্বচ্ছ কারসাজির দরুণ মহিলা কর্মীরা জেরবার হয়ে যাচ্ছেন, আরও শোষিত ও অপমানিত হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেমতো কাজ দেওয়া, রেটিং-এর তাড়না, যখন তখন অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া, “পুরুষদের মতো ওরা তাড়াতাড়ি সাড়া দিতে পারে না, বেশিক্ষণ কাজ করতে পারে না” এইসব বস্তাপচা অজুহাত ইত্যাদির জেরে মহিলা কর্মীদের মানসিক পীড়ন বাড়ছে।

মহিলাদের, বিশেষ করে, মহিলা ড্রাইভারদের সমস্যা রাস্তায় পরিচ্ছন্ন ও সুরক্ষিত শৌচাগারের অভাব। অনেক সময় গুগল দেখে শৌচাগার খুঁজতে গিয়ে সওয়ারীর খারাপ রেটিং, কোম্পানির জরিমানার মুখে পড়তে হয়। লিঙ্গবৈষম্যমূলক কথাও শুনতে হয় ‘গাড়ি চালাতে জানেন তো?’ এসব খুচরো সমস্যাও আছে দৈনিক দৌড়ে।

মহিলারা কর্তৃপক্ষের অন্যায়, অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে ক্রমশ প্রতিবাদমুখর হচ্ছেন। গত জুলাই মাসে আরবান কোম্পানির হাজার হাজার মহিলা গিগ শ্রমিক ভারত জুড়ে অন্তত আধ ডজন শহরে অস্বচ্ছ প্রতিক্রিয়া ও রেটিং-এর বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

প্রসাধন ও গৃহপরিচর্যা পরিষেবার অ্যাপনির্ভর ফার্মের মহিলা কর্মীরা কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়ম আর অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেশনের বিরুদ্ধে দেশজোড়া প্রতিবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের হাতিয়ার শ’য়ে শ’য়ে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। আরবান কোম্পানির মহিলা গিগ কর্মীদের ‘অল ইন্ডিয়া গিগ ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর নেতৃত্বে। ভারতে মহিলা গিগ শ্রমিকদের এই প্রথম দেশজোড়া প্রতিবাদ হতে চলেছে।

দ্রুত প্রসারণশীল গিগ অর্থনীতিতে এমনিতেই পুরুষ প্রাধান্য রয়েছে। মহিলাদের কাজের বিপুলমাত্রায় অসংগঠিত চেহারার জন্য মহিলাদের ট্রেড ইউনিয়নে অংশ নেওয়া কার্যত কঠিন ছিল। কিন্ত এখন পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাচ্ছে। অনেক মহিলা ইউনিয়নে যোগ দিচ্ছেন। গিগ কর্মীদের অধিকারের দাবিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলারা। আরও সুবিধাজনক অবস্থান ও নিজেদের তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি রাজস্থানে ‘সূচনা এবং রোজগার অধিকার অভিযান’ নামে একটি মহিলা গোষ্ঠী গিগ কর্মীদের আইনি খসড়া তৈরিতে সাহায্য করেছে। তারই এক সদস্য রঞ্জিতা স্বামী ‘থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন’কে জানিয়েছেন “মহিলা গিগ শ্রমিকরা অন্য প্ল্যাটফর্মের শ্রমিকদের আন্দোলন দেখে উৎসাহিত, উদ্বুদ্ধ হচ্ছিলেন। তারা মোবাইলের মাধ্যমে সহজে আর তাড়াতাড়ি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পেরেছেন, শহর বলেই; গ্রামে স্বভাবতই কাজটা আরেকটু কঠিন” ।

মঞ্জু গোয়েল উত্তর ভারতের মানেসর শহরে অ্যামাজন ওয়্যারহাউসে কয়েক মাস কাজ করেছেন। ওনার অভিজ্ঞতা- লম্বা লাইনে মেয়েদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়, ভারী বোঝা তুলতে হয়, কাজের ফাঁকে রেস্ট রুমে যাওয়ারও সুযোগ খুব কম। উনি উন্নত পরিস্থিতির দাবিতে এবং ব্ল্যাক ফ্রাইডে-তে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য ‘অ্যামাজন ওয়ার্কার্স’-এর তরফে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও টুকরো আলাপের মাধ্যমে ৬০ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি আরও জানান, আরবান কোম্পানির বিরুদ্ধে মহিলা গিগ কর্মীদের প্রতিবাদ দেখেই তারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তার মত আরও অনেক একলা-মায়ের কষ্টের কথা, সমস্যার কথা তারা নিজেরা ছাড়া আর কে বলবে?

অ্যামাজনের এক মুখপাত্র অবশ্য তাদের অভিযোগ “সত্য নয়” বলে জানিয়ে বলেন, কোম্পানি মহিলাসহ সবার কাজের সুস্থ পরিবেশের নিশ্চয়তা দেয়। অ্যাসোসিয়েশনের স্বাধীনতা এবং সহযোগীদের কোনো প্রতিশোধ, হুমকি ও হেনস্থার ভয় ছাড়াই শ্রমিক সংগঠন গড়ার, তাতে যোগ দেওয়ার বা না দেওয়ার স্বাধীনতাকে সম্মান করে।

বাইক-সওয়ার ডেলিভারি সার্ভিসে থাকা কর্মীদের থেকে প্রসাধন ও গৃহ পরিচর্যা পরিষেবায় যুক্তদের সংগঠিত করাটা চ্যালেঞ্জিং, কারণ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাটাই মুশকিল। ২০২১-এর অক্টোবরে আরবান কোম্পানির মহিলা শ্রমিকরা বেশি কমিশনের দাবিতে এবং রেটিং সিস্টেমের অস্বচ্ছতা ও অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা না থাকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংঘটিত করতে পেরেছিলেন কয়েক মাসের হোয়াটসঅ্যাপ আলোচনার পর। যখন বোঝা যায় সবার দাবি একই, তখন চুপচাপ পার্কে ছোট ছোট দলে মিটিং চলতে থাকে। জানিয়েছেন সীমা সিং, যিনি ঐ কোম্পানিতে চার বছর কাজ করার পর তার আইডি ব্লক করা হয়। দিল্লির কাছে গুরুগ্রামে কোম্পানির অফিসের বাইরে প্রায় দু’শো মহিলা শ্রমিক বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। ডিসেম্বরে হয় দ্বিতীয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে আরবান কোম্পানি কয়েকটি দাবি মেনে নিলেও, সীমা সহ চারজন মহিলা সংগঠকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল যা ভারতের গিগ অর্থনীতিতে প্রথম।

জুলাই-এর বিক্ষোভে হাজার হাজার মহিলার সামিল হওয়া বুঝিয়ে দেয়, মহিলা শ্রমিকরা এই প্ল্যাটফর্মের অসততা ও অস্বচ্ছতা সম্পর্ক অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন যদিও এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু পাল্টায়নি – সীমার অভিমত। কোম্পানি অবশ্য এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর বেতন, কাজের শর্তাবলী এবং পরিচালন ব্যবস্থার নিরিখে অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউট-এর ‘ফেয়ারওয়ার্ক’ নামক সমীক্ষায় উপরি উক্ত ফার্মটি ভারতের ডজন খানেক গিগ কোম্পানির মধ্যে শীর্ষস্থান পেয়েছিল!

জুলাই-এর প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়ায় কোম্পানি জানিয়েছে – কয়েকজন অংশীদার পরিষেবার মান বজায় রাখতে না পারায় তাদের বিদায় নিতে বলা হয়েছে, “এক মুক্ত-দ্বার নীতি বজায় রাখতে ও অংশীদারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনাকে উৎসাহিত করতে” নাকি কোম্পানি বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিউটিশিয়ান সীমা পারভীন, যিনি আরবান কোম্পানির হায়দ্রাবাদ শাখায় দু’বছরের কর্মী এবং যার আইডি ব্লক করে দেওয়া হয়েছে, অ্যাপের মাধ্যমে কোম্পানির কারও কাছে আবেদন জানাতে পারেননি, একমাত্র যে পথটা তার কাছে খোলা ছিল। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, “এই প্ল্যাটফর্ম যে কতজনের জীবন কেড়েছে! আমি এই রাজ্যের অন্তত দু’জন মহিলার কথা শুনেছি যারা আইডি ব্লক করে দেওয়ার পর নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন”।

জুলাই-তে রাজস্থান সরকার এমন একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য বিল এনেছে যা ভারতের গিগ অর্থনীতিতে প্রথম। সেটি হল – অ্যামাজন জোম্যাটো আরবান কোম্পানির মতো সংস্থাগুলির প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেনের ওপর সারচার্জ বসিয়ে সেই অর্থে গিগ ও প্ল্যাটফর্ম শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন করা। কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু সরকারও ইতিমধ্যে তাদের কল্যাণ, নথিভুক্তি ও অভিযোগ নেওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আন্দোলনকারীরা মনে করেন, ভারতে সংঘবদ্ধ হতে থাকা মহিলা গিগ কর্মীরা “এখন রাজনৈতিক আলাপ আলোচনায় তাদের নিজেদের পরিসর খুঁজে পেয়েছেন” যদিও তাদের সমর্থনে আইন পাস হতে সময় লাগবে।

ইউনিয়নে যোগ দিতে চাকরি হারানোর ভয় ছিল। আন্দোলন সংগঠকদের কেউ কেউ চাকরিও হারিয়েছেন। তা সত্ত্বেও আজ মহিলা গিগ শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে। শ্রমিক শ্রেণিকে সংগঠিত করতে গেলে গিগ শ্রমিকদেরও সংঘবদ্ধ করতে হবে যেটা যথেষ্ট কঠিন কাজ। আর সেই কঠিন কাজেরই দায়িত্ব যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়েও কাঁধে তুলে নিয়ে ভারতের মহিলা গিগ শ্রমিকরা এক ইতিহাস গড়তে চলেছেন। তাদের লড়াই জয়যুক্ত হোক।

ঋণস্বীকার : ইন্ডিয়া’স উইমেন গিগ ওয়ার্কার্স অর্গ্যানাইজ উইথ হোয়াটসঅ্যাপ, সিক্রেট মিটিংস : থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন (বিএল)
- জয়ন্তী দাশগুপ্ত

খণ্ড-30
সংখ্যা-32