বলতে হবে এক মোক্ষম ‘‘না’’!
say-a-perfect-no

এই জুনে গেরুয়া বাহিনীর উৎখাতকে নিশ্চিত করতেই হবে, আর সে জন্যে আমাদের সকলের, কম বেশি সম্ভবপর সমস্ত উদ্যোগ নিতে হবে। দিনকয়েক আগে কথাটা বলেছিলেন আমার এক বন্ধু। করতে হবে এমন কিছু ‘কাজ’ যা মানুষ দেখতে পাবে, লিখতে বা বলতে হবে এমন কিছু ‘শব্দ’ যা মানুষ পড়তে বা শুনতে পাবে, যা আরও অনেক অনেক মানুষকে ভাবিয়ে তুলবে, এই ভাবেই তাদেরও কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করবে! একে অপরকে ভাবিয়ে তোল!

আমার দুঃখ হল, ‘গৈরিক’ এমন সুন্দর একটা রং, দস্যুবাহিনীর হাতে পড়ে সমস্ত গৌরব আর উজ্জ্বলতা হারালো!

পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রকে রক্ষা করার লড়াই কখনও এত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি। এতখানি জীবন-মরণের প্রশ্নও হয়ে ওঠেনি। এই ‘বাঁচানো’র লড়াইয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ — ভারতীয় সংবিধান; যাকে প্রতিটি নাগরিক এখনও পর্যন্ত স্বতঃসিদ্ধের মতো নিশ্চিত বলেই ধরে নেন এবং মনের অবচেতনে বিশ্বাস করেন, আমাদের সভ্য, স্বাভাবিক প্রাত্যহিক জীবনে যে গণতান্ত্রিক অধিকারগুলি ভোগ করি সেগুলি সংবিধানে সুরক্ষিত রয়েছে।

আজ সংবিধানের মধ্যে সযত্ন-রক্ষিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক অধিকার আক্রান্ত। কথা বলার অধিকার, প্রতিবাদের অধিকার, সমাবেশিত হওয়ার অধিকার, ভাষণের অধিকার, লেখার অধিকার, সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি প্রকাশের অধিকার, ভ্রমণের অধিকার, অ-গৈরিক কোনো ধর্মে বিশ্বাস রাখা ও তা অনুশীলনের অধিকার — সবক’টিই আজ আক্রান্ত। গেরুয়া ছাড়া আর সব রং-ই আজ কালো!

গোদী মিডিয়া রয়েছে ষাঁড় দৌড়ের উন্মত্ত প্রতিযোগিতায়। বিচারব্যবস্থাও কখনও কখনও গোদী মিডিয়ার দিকেই ঝুঁকে পড়ছে। আইন বলবৎকারী সংস্থাগুলো আছে ‘ডাইনি খোঁজ’-এর উন্মত্ততায়।

চাবুকধারী বুল মাস্টারকে এবার থামাতে হবে! একদিকে বহু মানুষ যখন নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাতে, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে বেছে নিয়েছেন রাস্তাকে, এবার সময় এসেছে ব্যালটের ‘কথা বলার’, যে ‘কথা’, ‘যেভাবে’ কখনও বলা হয়নি! না হলে, আর কোনো ব্যালটই হয়তো থাকবে না আগামীদিনে! লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোট দেবেন, নিজেদের মত জানাবেন। লক্ষ লক্ষ ‘অপ্রাপ্ত বয়স্ক’রা ভোট দেবে না। কিন্তু তাদের পরিণত মন ও শক্তি আছে পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার। তারাই দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ভোটের মাধ্যমে এক মোক্ষম ‘‘না’’ বলতে, তারাই অনুপ্রাণিত করতে পারে তাদের বাবা মা, ভাই বোন, তুতো ভাই বোন, ভাগ্নে ভাইপো, কাকা কাকিমা, জ্যেঠু জ্যেঠিমা, মামা মাসি, ঠাকুর্দা ঠাকুমা, দাদু দিদাকে!

- তপন সেন

খণ্ড-31
সংখ্যা-15