খবরা-খবর
রাজ্যে রিলায়েন্সের আউটলেটের সামনে বয়কট বিক্ষোভ
rrrr

কলকাতা

কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে চলছে কৃষক আন্দোলন। দেশের রাজধানী দিল্লীর সীমান্ত অবরোধ করে কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন এই আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের সংগ্রাম জারি থাকবে। দেশের কৃষকদের ভবিষ্যতকে সংকটের মুখে ঠেলে আম্বানি-আদানির হাতে কৃষিক্ষেত্রকে তুলে দেওয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন কৃষকদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। সেই চক্রান্তকে প্রতিহত করতেই আন্দোলনরত কৃষকরা গত ১৪ ডিসেম্বর দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশজুড়ে প্রতিবাদ দিবসে যোগদান করার জন্য, আম্বানি-আদনির সমস্ত পণ্য বয়কট করার জন্য। স্পষ্ট কথায় তারা দাবি জানিয়েছিলেন নয়া কৃষি আইন বাতিল করতে হবে, এমএসপি’র আইনি অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।

কৃষকদের সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৪ তারিখ কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভে নামল আইসা, এআইসিসিটিইউ, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন। ধর্মতলায় রিলায়েন্স ট্রেন্ডস এবং জিও স্টোরের সামনে চলল বিক্ষোভ কর্মসূচী, ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখে ধর্মতলার রাস্তা। দাহ করা হয় নরেন্দ্র মোদী – মুকেশ আম্বানি – গৌতম আদানীর কুশপুত্তলিকা, রাজপথে জ্বালানো হয় জিও’র পণ্য, জানিয়ে দেওয়া হয় দেশের কৃষকদের তথা মেহনতি মানুষের উপর যে কোনো ফ্যাসিবাদী আক্রমণ প্রতিহত করা হবে জোরকদমে। কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখলেন আইসার পক্ষ থেকে সৌমেন্দু মিত্র, লিবারেশনের পক্ষ থেকে তমাল চক্রবর্তী, বাসুদেব বসু। বক্তারা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন দমনপীড়নের মাধ্যমে, আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করে কৃষকদের এই লড়াইকে থামানো যাবে না। কোনোরকম সংশোধনী নয়, কৃষি আইন বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলছে, চলবে।

barasat

বারাসাত

রাজধানীর বুকে চলমান কৃষক আন্দোলনের ১৯তম দিনে কৃষকরা দিল্লি  জয়পুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে ছিলেন। এদিন একইসঙ্গে ছিল কৃষকদের গণঅনশনের কর্মসূচী। পাশাপাশি এদিন দেশব্যাপী এআইসিসিটিইউ, ছাত্র সংগঠন আইসা এবং এআইপিএফ সহ বিভিন্ন গণসংগঠন কর্পোরেট আম্বানি আদানিদের কোম্পানিরাজের উপর চাপ তৈরি করার কূর্মসুচী গ্রহণ করে। এই উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর বারাসাত সুভাষ ময়দানের পাশে রিলায়েন্স স্টোরে আইসা, এআইপিএফ এবং বেশ কিছু গণতান্ত্রিক মানুষ বিক্ষোভ দেখায়। ‘বয়কট রিলায়েন্স’ আওয়াজ তুলে কলোনি মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিল নবপল্লী আবাসিক এলাকায় অবস্থিত রিলায়েন্স স্টোরের সামনে পৌঁছায় এবং ক্রেতাদের রিলায়েন্সের জিনিসপত্র না কিনতে অনুরোধ করে। অবরোধ চলাকালীন সময়ে বক্তব্য রাখেন আইসা’র সংগঠক অন্নেষা রায় ও আমান, সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সংগঠক শোভনা, প্রাক্তন শিক্ষক এবং গণআন্দোলনের সংগঠক নীলকন্ঠ আচার্য প্রমুখ। বক্তারা কৃষি ও কৃষক বিরোধী আইন প্রত্যাহারের দাবি এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন। গণসঙ্গীত গেয়ে উজ্জীবিত করেন পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদের সংগঠক অনুপ মজুমদার এবং মেঘনা মজুমদার। অবরোধের পর মিছিল কলোনি মোড়ে ফিরে এসে আম্বানি আদানি এবং তাদের দোসর নরেন্দ্র মোদীর প্রতিকৃতি পোড়ানো হয়। শ্লোগান তোলে আইসা সংগঠক রুমেলা। এই যুক্ত কর্মসুচীতে নেতৃত্বের অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন এআইপিএফ-এর উত্তর ২৪ পরগণা জেলা আহবায়ক সুজিত ঘোষ।

নৈহাটি পৌরসভার পাশে জিও ডিজিটালের সামনে কৃষক আন্দোলনের সংহতিতে ‘একটি নাগরিক উদ্যোগ’এর অবস্থান ও প্রতিকী জিও সিম পোড়ানো হয়। দীর্ঘক্ষণের এই অবস্থান-বিক্ষোভে নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো।

dda

হাওড়া

১৪ ডিসেম্বর দিল্লীতে আন্দোলনরত কৃষকদের ডাকা সারা ভারত প্রতিবাদ দিবসে বালিতে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন ও আইসা’র নেতৃত্বে কৃষিতে কর্পোরেট রাজের বিরুদ্ধে মিছিল সংগঠিত হয় বালি পার্টি অফিস থেকে বালিখাল পর্যন্ত। দৃপ্ত এই মিছিল থেকে আওয়াজ ওঠে কৃষি আইন ২০২০ বাতিল করতে হবে। শ্লোগান ওঠে কৃষিতে কর্পোরেট রাজ মানছি না। মিছিলের শেষে আম্বানি-আদানির প্রতিকৃতি জ্বালানোর মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ ব্যক্ত করা হয়। শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন পার্টির হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য নীলাশীষ বসু।

খণ্ড-27
সংখ্যা-45