লক্ষ্ণৌ কিষাণ মহাপঞ্চায়েতের ঘোষণা
Announcement of Lucknow

২২ নভেম্বর সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার লক্ষ্মৌ মহাপঞ্চায়েতের বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার এই প্রথম মহাপঞ্চায়েত। মোর্চার ব্যানারে অংশগ্রহণ করেছিলেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন, সারা ভারত কিষাণ মহাসভা, সারা ভারত কিষাণ সভা, জয় কিষাণ আন্দোলন এবং সারা ভারত কিষাণ মজদুর সভা। এছাড়া যে সমস্ত সংগঠন সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে এআইএসএ, এআইএআরএলএ, আরওয়াইএ এবং বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। লাল এবং সবুজ পতাকা নিয়ে হাজার হাজার কৃষক সমাবেশিত হয়েছিলেন।

মহাপঞ্চায়েতে বিকেইউ নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, কৃষকদের জন্য তিনটি কৃষি আইন যে ক্ষতিকারক, সরকারকে তা বোঝাতে একবছর লেগে গেল। মোদী চেষ্টা করেছিলেন কৃষকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার, সেইজন্য বলেছেন মাত্র কতিপয় কৃষকেরা কৃষি আইন তিনটি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা কি মুষ্টিমেয় কৃষক বলে মনে হয়? কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায় আমাদের আন্দোলন থামবে না। ক্ষমা প্রার্থনাও যথেষ্ট নয়। কৃষকদের জন্য উপযুক্ত কর্মসূচি আনতে হবে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য কমিটি গঠনের সরকারি প্রস্তাবকে নস্যাৎ করে টিকায়েত বলেন — গুজরাটে যখন নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি নিজে। ঐ কমিটি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সরকারকে সুপারিশ করে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টীর জন্য একটি আইন প্রবর্তন করা দরকার। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ঐ কমিটির সুপারিশ এখনও ফাইলবন্দী রয়েছে। তাই নতুন কমিটির কোনোই প্রয়োজন নেই। বরং প্রধানমন্ত্রী মোদী সুস্পষ্টভাবে বলুন ঐ সুপারিশগুলি যেগুলির অংশীদার তিনি নিজে সেগুলি বাতিল করবেন না গ্রহণ করবেন। আমরা অতি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে একটি খোলা চিঠিতে বিভিন্ন দাবি — যেমন ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, বিদ্যুৎ বিল, বীজ বিল, দুধ বিল, শহীদ কৃষক পরিবারদের ক্ষতিপূরণ এবং তাদের স্মারক নির্মাণের জন্য অবহিত করেছি। এটাও বলেছি, যদি উল্লেখিত বিলের মধ্যে কোনো বিল আমাদের সাথে বিনা আলোচনায় পাশ করানো হয় তাহলে আমরা তা নাকচ করবো। কৃষকদের থেকে বহু একর জমি বিনা ক্ষতিপূরণে জবরদস্তি নেওয়া হয়েছে। যদি ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হয় তবে আমরা তা চষে ফেলব। চিনিকলগুলির মালিক আখচাষিদের বকেয়া মূল্য অবিলম্বে মিটিয়ে দিক। লখিমপুর খেরির সুগারমিল উদ্বোধন করবেন অভিযুক্ত মন্ত্রী অজয় টেনি। যদি তা করেন তবে সমস্ত আখচাষিরা তাদের আখ সুগারমিলের বদলে জেলা শাসকের অফিসে জমা করবেন। টিকায়ত স্পষ্টভাবে বলেন, সরকার কৃষকদের সাম্প্রদায়িকভাবে বিভাজিত করতে চাইছেন কিন্তু তারা যেন এই ফাঁদে পা না দেন বা ভেসে না যান।

এআইকেএম নেতা ঈশ্বরীপ্রসাদ কুশওয়াহা বলেন যতক্ষণ এমএসপি গ্যারান্টী আইন সহ সব দাবি পূরণ না হচ্ছে এবং টেনিকে বরখাস্ত করা হচ্ছে ততক্ষণ কৃষকদের জয় আসবেনা। কৃষক আন্দোলন থামবেনা যতক্ষণ না ২০২২ সালে ইউপি’র ক্ষমতা থেকে এবং কেন্দ্রে ২০২৪ সালে বিজেপি’কে মসনদচ্যুত করা হচ্ছে। এআইএআরএলএ নেতা শ্রীরাম চৌধরী বলেন, কৃষি শ্রমিকরা অভুক্ত হওয়ার কিনারায় রয়েছেন এবং আদানি আম্বানিরা বকলমে দেশ চালাচ্ছেন।

দেবারিয়া, বালিয়া, গাজীপুর, মৌ, চান্দৌলি, মির্জাপুর, বেনারস, জৌনপুর, আজমগড়, ভাদোহী, শোনভদ্র, এলাহাবাদ, রায়বেরিলি, ফৈজাবাদ, লক্ষ্মৌ, হরদৈ, জালায়ূঁ, লখিমপুর খেরি, পিলিভিট, বিজনৌর এবং মৈনপুরি থেকে হাজার হাজার কৃষক সমাবেশিত হয়েছিলেন মহাপঞ্চায়েতে।

খণ্ড-28
সংখ্যা-42