পদ্মজা চৌহানকে তদন্ত দলের সদস্য করা চলবে না
Padmaja Chauhan

বিজেপি মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশীষ মিশ্রর গাড়ির চাকায় পিষে নিহত হওয়া কৃষকদের হত্যার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট যে হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে, সারা ভারত কিষাণ মহাসভা (এআইকেএম) তাকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু সেই দলের তিন আইপিএস সদস্যের একজন, পদ্মজা চৌহান সম্পর্কে এআইকেএম আপত্তি জানিয়ে ঐ তদন্তকারী দল থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এই আইপিএস অফিসার নিপীড়ন চালানোর জন্য কুখ্যাত। লখিমপুর খেরি জেলায় এসপি’র দায়িত্বে থাকার সময় তিনি কৃষক আন্দোলনের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছিলেন। নিপীড়নের শিকার কৃষকদের কণ্ঠস্বরে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য গণতন্ত্রের এক স্তম্ভ সংবাদ জগতও তাঁর হাতে আক্রান্ত হয়েছিল। সংবাদপত্রের ওপর আক্রমণের ঘটনার তদন্তে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া পাঁচ সদস্যের এক কমিটি গঠন করে, ঐ কমিটি এক ঐতিহাসিক রিপোর্ট দেয় যাতে পদ্মজা চৌহানের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। রিপোর্টে আরও প্রস্তাব করা হয় — তাঁকে যেন সর্বসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের স্থানে দায়িত্বে রাখা না হয় এবং তাঁর সম্পর্কিত এই বিষয়টি রাজ্যসভা, লোকসভা, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ও বিধান পরিষদে উত্থাপন করার পরামর্শও রিপোর্টে থাকে।

লখিমপুর খেরি জেলায় পোস্টিং থাকার সময় তাঁর সময়কালে অমর উজালার সাংবাদিক সমিউদ্দিন নীলুকে হত্যার যে চেষ্টা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তার নিন্দা করে, এবং তাঁকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলে। পদ্মজা চৌহানের নির্দেশে বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের হয়। এই ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব করলেও পদ্মজা চৌহান পুলিশ প্রশাসনের ওপরতলায় তাঁর সংযোগকে কাজে লাগিয়ে সেই তদন্তে স্থগিতাদেশ জারিতে সক্ষম হন। বিষয়টা এখনও হাইকোর্টে ঝুলে আছে।

এআইকেএম লখিমপুর তহশিলের গুথনা বুজরুগ গ্ৰামের দরিদ্র কৃষকেদের জমির পাট্টা দেওয়ার আন্দোলন চালিয়েছিল। পদ্মজা চৌহান সেই সময় লখিমপুরের এসপি ছিলেন এবং এআইকেএম নেতা রামদারাস ও ক্রান্তি কুমার সিং’এর বিরুদ্ধে গুণ্ডা দমন আইন প্রয়োগ করেছিলেন এবং কৃষক আন্দোলনের বহু কর্মীকে জেলে পুরেছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন বর্তমানে প্রয়াত আলাউদ্দিন শশি ও অজন্তা লোহিত।

এই ধরনের নিপীড়নের সঙ্গে যিনি যুক্ত, লখিমপুর খেরির কৃষক হত্যা তদন্তে গঠিত দলের সদস্য হওয়ার কোনো যোগ্যতা তাঁর থাকতে পারেনা বলে এআইকেএম মনে করে। এআইকেএম তাই দাবি জানিয়েছে — হয়, আইপিএস পদ্মজা চৌহান নিজেই তদন্তকারী দল থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নিন, অথবা সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে কোনো অবিতর্কিত আইপিএস অফিসারের নাম চেয়ে তাঁকে সিট’এর সদস্য করুক।

খণ্ড-28
সংখ্যা-42