খবরা-খবর
কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ধর্মতলায় সমাবেশ ও বিজয় মিছিল
Rally and victory procession at Dharmatala

২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবসের দিনে সারা দেশ জুড়ে পালিত হল কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি। ২০২০ সালে এই দিন গোটা দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত শ্রমিকেরা সারা দেশব্যাপী ধর্মঘট সংঘটিত করেছিল, আর সেই দিনই তিন কৃষি আইন, বিদুৎ বিল ২০২০, বাতিলের দাবিতে সারা দেশের হাজারে হাজারে কৃষকেরা দিল্লীর সীমান্ত ঘিরে অবস্থান শুরু করেছিল। মোদী সরকার বিভিন্নভাবে এই আন্দোলনকে বদনাম ও দমন করার নির্মম প্রচেষ্টা চালালেও কিষাণ-কিষাণীরা তাঁদের অবস্থানে অনড় থেকে সরকারকে বাধ্য করেছে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রাথমিক জয় হয়েছে। তাই ২৬ নভেম্বর এই আন্দোলনের বর্ষপূর্তি হয়ে উঠেছে বিজয়ের উৎসব।

সারা দেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার অন্তর্ভুক্ত সমস্ত কৃষক এবং গ্রামীণ মজুরদের সংগঠন এবং কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে জমায়েত এবং সভার সাথে সাথে কলকাতায় ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেলে এক মহতি সভা ও মিছিল সগঠিত হয়। ওয়াই চ্যানেলের সভাতে কয়েক হাজার মানুষ সামিল হন। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার পক্ষ থেকে সভা পরিচালনা করেন কার্তিক পাল এবং বক্তব্য রাখেন অমল হালদার, অভিক সাহা, সমীর পুততুণ্ড, প্রদীপ সিং ঠাকুর  সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ট্রেড ইউনিয়নগুলির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাসুদেব বসু, অনাদি সাহু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মহিলা সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কনীনিকা বসু, নমিতা হালদার, কল্পনা দত্ত, সুফিয়া খাতুন ও অন্যান্যরা। ছাত্রযুব সংগঠন থেকে বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী মুখার্জী।

সমস্ত বক্তার বক্তব্য থেকেই উঠে আসে এই জয় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একটা প্রাথমিক জয়। যতক্ষন না ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টি এবং বিদ্যুৎ বিল ২০২০ বাতিল না করছে ততদিন কৃষকেরা পিছু হটবে না। বক্তব্যে উঠে আসে এরাজ্যের কৃষকদের দুর্দশা তথা রাজ্য সরকারের অবহেলার কথা। গত একবছর ধরে চলা এই আন্দোলনের সময়েই রাজ্যের এমএসপি আইনের প্রস্তাবনা পেশ হয়েছিল রাজ্যের কাছে, কিন্তু আজও তার সুরাহা হয়নি। রাজ্যে কৃষকেরা উৎপাদন মূল্যের কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। রাজ্যে ২০১৪’র চুক্তি চাষ সংক্রান্ত আইনের ফলে চরম বিপদের শিকার হচ্ছেন চাষিরা। অবিলম্বে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি ওঠে।

সভা থেকে মোদী সরকারের বিপর্যয়কর নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা ঘোষিত হয়। শ্রমিক বিরোধী শ্রম কোড, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, জাতীয় মানিটাইজেশন পলিসের নামে দেশ বেঁচে দেওয়ার নীতি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার বার্তা দেওয়া হয়। ২০২৪’র সাধারণ নির্বাচনে ফ্যাসিবাদী মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আপামর জনসাধারণকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার আওয়াজ ওঠে।

সভা শেষে ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এক সুবিশাল মিছিল বিজেপি–আরএসএস’এর বিভেদকামী বিপর্যয়কর শাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে ধর্মতলা থেকে মৌলালি হয়ে শিয়ালদহে গিয়ে শেষ হয়।

খণ্ড-28
সংখ্যা-42